চাপাদহ বিলে অবৈধ ড্রেজারেই কৃষকের সর্বনাশ

বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের চাপাদহ বিল ও সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা। চাপাদহ বিল মৎস্য সমিতির কয়েক নেতার যোগসাজসে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু সরকারী লিজ নেওয়া বিল থেকেই নয়, ব্যক্তিগত জায়গায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারনে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা। ড্রেজার বসাতে বাঁধা দিলেও কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে বালু উত্তোলনের সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিল থেকে কয়েক কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রির পাঁয়তারা করছে মৎস্যজীবি সমিতির নেতারা এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। বালু উত্তোলনের কারনে কয়েক হাজার একর জমির ধান, পাটসহ ফসলী জমি হুমকির মুখে পড়বে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উত্তোজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
অভিযোগে জানা গেছে, সরকারের নিয়ন্ত্রনে থাকা ৭৬ দশমিক ১০ একর জমি লিজ নিয়ে চাপাহদ বিলে মাছ চাষ করে আসছে মৎস্যজীবি সমিতির নামে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। বর্তমানে শুকনো মৌসুমে চাপাদহ বিলের খননের নামে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। শুধু বিলের জায়গায়ই নয়, ড্রেজার বসানো হয়েছে ব্যক্তিমালিকানা জমিতে। আর তা নিয়েই চলছে স্থানীয়দের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভের। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারের কাছে কোন অনুমতি না নিয়েই অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে নিজেরা লাভবান হওয়ার স্বার্থে বালু উত্তোলন করে বিক্রির পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। তাছাড়া লিজ নেওয়া জমি বাদে কয়েকজনের জমিতে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন। এ নিয়ে বাঁধা দিলে তাদের নানা রকম হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। চাপাদহ বিলে যাদের জমি রয়েছে তাদের মধ্যে বিশ্বজিৎ, দিনেশ সরকার, মিহির বিশ্বাস, আফসার মোল্লা, সাগর মোল্লা, বায়জিদ অভিযোগ করে বলেন, ব্যক্তিগত জায়গায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ নিয়ে বাঁধা দিলে তাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বালু উত্তোলনের ফলে বিশাল এলাকা নিয়ে ধসে যাবার আশংকা রয়েছে। এমনটি হলে বিলে উৎপাদিত ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসলী জমি নষ্ট হবে। বিলের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া রেল সড়কটিও পড়বে হুমকির মুখে। তারা জানান, বিলে শতাধিক ব্যক্তির মালিকানা জমি রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৭৭ একর জমি সরকারের কাছ থেকে বিলের নামে লিজ নেওয়া হলেও প্রভাবশালীরা বর্ষা মৌসুমে প্রায় ২ হাজার একর জমিতে মাছ চাষ করে থাকে। যারা জমির মালিক রয়েছে তাদের কোন কিছুই দেওয়া হয়না। চাপাদহ বিল মৎস্য সমিতির নামে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এটি নিয়ন্ত্রন করেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এরসাথে প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তি, সাবেক, বর্তমান কয়েক চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিকসহ প্রভাবশালীরা জড়িত রয়েছে। ফলে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন এবং ব্যক্তি মালিকানা জমিতে মাছ চাষ করা হলেও ভয়ে কেউ টু শব্দটিও করতে সাহস পাননা। ভুক্তভোগীরা জানান, ব্যক্তি মালিকানা জমি বুঝিয়ে দেয়াসহ বিল থেকে যাতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন না করা হয় এবং ফসলী জমি, রেলসড়ক রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানানো হয়।
এ বিষয়ে চাপাদহ বিল মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি আশুতোষ বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা অনুমতি নিয়েই ড্রেজার বসিয়েছি এবং কারো জমিতে ড্রেজার বসাইনি।

%d