বৃদ্ধ পিতাকে দেখতে চাওয়ায় স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধুর মৃত্যুর অভিযোগ

বিশেষ প্রতিবেদক।
অশীতিপর মৃত্যু পথযাত্রী পিতাকে দেখতে বাপের বাড়ি যেতে চাওয়ায় স্বামীর হাতে লাশ হতে হলো দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধুকে। অবশেষে বাপের বাড়িতে এলেও জীবিত নয়, অ্যাম্বুলেন্সের খাটিয়ায় লাশ হয়ে ফিরতে হলো তাকে। স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে বলে গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে।
নিহত গৃহবধূর নাম বিথি বেগম (৩৫)। সে বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের রতন সেখের মেয়ে। রবিবার বিকালে ওই গৃহবধূর লাশ ময়না তদন্ত শেষে পিতার বাড়িতে নিয়ে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৫ বছর আগে একই উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের তামারহাজি গ্রামের নজির সেখের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সেখের সাথে বিথি বেগমের বিয়ে হয়।
বিথি বেগমের পরিবারের সদস্যরা জানায়, বিথির অশীতিপর বৃদ্ধ পিতা বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু পথযাত্রী। এ খবর পেয়ে শনিবার পিতাকে দেখতে বাপের বাড়ি আসতে চায় বিথি। স্বামী সাখাওয়াত হোসেন এতে বাধ সাধে। এ নিয়ে বিথি বেগম জেদ ধরলে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায় পাষন্ড স্বামী। এ সময় বিথি বেগমের তলপেটে লাথির আঘাতে শরীরের অভ্যন্তরিণ রক্তক্ষরণ ঘটে জননেন্দ্রিয় দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে সে অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে মৃত ভেবে স্বামী সাখাওয়াত হোসেন ঘরে থাকা কীটনাশক স্ত্রীর মুখে ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে পরিবারের সদস্যদের জানায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক বিথি বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় তার।
নিহত গৃহবধূর মা দোলেনা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ রানা জানান, মৃতদেহর সুরতহাল করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে।

%d