বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-দুটি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ, বিপাকে সাধারণ রোগীরা

বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি সরকারী অ্যাম্বুলেন্স এক মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। পেট্টোল পাম্প থেকে বাকীতে তেল না দেবার কারণে সরকারী অ্যাম্বুলেন্স দু’টি বন্ধ রয়েছে। এতে সরকারী অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হচ্ছে প্রায় তিনগুণ টাকায়। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। চালক রয়েছেন একজন। অ্যম্বুলেন্সের তেল বাকীতে সরবরাহ না করায় এক মাসের বেশী সময় ধরে গ্যারেজে তালাবদ্ধ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে দু’টি অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তেল বরাদ্দ না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তেল বরাদ্দ পেলে অ্যাম্বুলেন্স দুটির সেবা চালু করা সম্ভব হবে। বর্তমানে অ্যম্বুলেন্স দু’টি হাসপাতাল প্রাঙ্গণের উত্তর-পশ্চিম পাশে গাড়ি রাখার গ্যারেজে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট খাতে ১৫ লাখ টাকার বেশী বকেয়া থাকলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯ লাখ টাকার বেশী পরিশোধ করা হয়েছে। সেখানে বকেয়া রয়েছে আরও ৬ লাখ টাকার বেশী। আর নতুন করে বকেয়া রয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার বেশী। এতে পেট্টোল, অয়েল, লুব্রিকেন্ট বাবদ বকেয়া থেকে যায় পৌন ৯ লাখ টাকার উপরে। তাই নিরুপায় হয়ে বোয়ালমারীর মেসার্স স্বাধীন ফিলিং ষ্টেশন এন্ড এলপিজি অটো গ্যাস প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকৃত পূজি স্বল্পতার কারণে বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বাকীতে অ্যম্বুলেন্সের জ্বালানী সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং তেল দেয়া বন্ধ করে দেন।
নাম প্রকাশ না করে বোয়ালমারী পৌর সদরের এক বাসিন্দা বলেন, তিনি তার অসুস্থ মাকে নিয়ে প্রথমে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিতে চাইলে তাকে জানানো হয় হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ রয়েছে। পরে তাকে প্রায় তিনগুণ টাকা দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হয়।
উপজেলার বনমালিদিয়া গ্রামের সাত্তার শেক বলেন, আমার ভাইকে বোয়ালমারী হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় বিপাকে পড়তে হয়। সরকারী অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ৮০০ টাকা হলেও বেসরকারী মাইক্রোবাসে দুই হাজার ৫’শ টাকা দিয়ে ভাড়া করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।
স্বাধীন ফিলিং ষ্টেশনের ম্যানেজার পলাশ সাহা বলেন, আমাদের সাথে চুক্তি হবার পর আগের ২লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং চলতি মাসের প্রায় ৩৪ হাজার টাকা মিলে ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। আগে নাহার ফিলিং ষ্টেশন থেকে তেল নিতো তারা। শুনেছি সেখানেও টাকা বকেয়া রয়েছে।
স্বাস্থ কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সচালক মাসুদ আহমেদ লিটনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এক মাসের অধিক সময় ধরে দুটি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ রয়েছে। পেট্টোল পাম্পে বাকিতে তেল দিচ্ছে না, যার কারণে অ্যাম্বুলেন্স দুটি বন্ধ হয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম এম নাহিদ আল রাকিব বলেন, তেল বরাদ্দ না থাকায় আপাতত অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। তেল বরাদ্দ পাওয়া গেলে এ সেবা চালু করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, বোয়ালমারীতে তেল বরাদ্দ কম পাওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স দু’টি বন্ধ রয়েছে। নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ পাওয়া গেলে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা সম্ভব হবে।

%d