বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গুরুত্বপূর্ন এক্সপ্রেসওয়ে ও রেল সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে সরকারী বড় একটি জায়গা দখল করে দোকান ঘর উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি মহল। রাতের আঁধারে এ দোকান ঘর উত্তোলন করায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা প্রশাসনকে জানালেও সরকারী জায়গায় গড়ে তোলা দোকান ঘরটি ভেঙ্গে না দেওয়ায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গার গুরুত্বপূর্ন স্থান হিসাবে বিবেচিত মালীগ্রাম বাজারের এক্সপ্রেসওয়ে ও রেল সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে (দক্ষিন পাশে) প্রভাবশালী একটি মহল সরকারী জায়গায় দোকান ঘর নির্মান করছেন। হঠাৎ করে ছুটির দিন ও রাতের আঁধারে এ চক্রটি বেশ কয়েকটি দোকান ঘর ইতিমধ্যেই নির্মান করে ফেলেছেন। বর্তমানে টিনসেডের দোকান ঘরগুলো নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। রাতের আঁধারে দোকান ঘর নির্মানের কারনে বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি হয় স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীদের মাঝে।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাজারের বেশ কয়েকজন জানান, বর্তমান ফরিদপুর-৪ আসনের সন্ত্রত এমপির নাম ব্যবহার করে প্রভাবশালী একটি মহল এ দোকান ঘর নির্মান কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ স্থান ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন মালিগ্রাম বাজার ও বাস স্ট্যান্ডের (দক্ষিন পাশে) প্রভাবশালী মহলটি প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সরকারী জায়গায় অবৈধভাবে দোকান ঘর উত্তোলন করছেন। দিনের বেলা কাজ বন্ধ থাকলেও রাতের আঁধারে দোকান ঘরের কাজ করছে প্রভাবশালী মহলটি। তাছাড়া সরকারী ছুটির দিনেও তারা কাজ করছেন। প্রভাবশালীদের ভয়ে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি না হলেও, তাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা জানান, সরকারী জায়গাটিতে দীর্ঘদিন ধরে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হতো। কিন্তু আজ সেই জায়গাটি হাতিয়ে নিতেই প্রভাবশালীদের রাতের আধারে এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা জানান, স্থানীয় এমপির নাম ব্যবহার করে জায়গাটি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন এই প্রভাবশালী মহলটি।
এদিকে, মালিগ্রাম বাজারে দোকান ঘর উত্তোলনের বিষয়ে প্রভাবশালীদের একজন মিজান হাওলাদার জানান, দোকান ঘর উত্তোলনে আমার বিষয়ে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা। এখানে যে দোকান ঘরগুলো উঠছে সেগুলো পূর্বের জায়গার মালিকেরা নিজেরাই অস্থায়ী ভাবে নির্মাণ করছেন। এই বাজারের উত্তর পাশেও অস্থায়ীভাবে পূর্বের জায়গার মালিকেরা অনেক দোকান-ঘর নির্মাণ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এভাবে দোকান ঘর নির্মান করা ঠিক হচ্ছে কিনা এ প্রাশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা যারা করছে তারা সবাই অস্থায়ী ভাবে দোকান ঘর করছেন, তাই সরকার যে কোন সময়ে তাদের প্রয়োজনে জায়গা দখলে নিয়ে নিবে। এতে কারোর আপত্তি করার সুযোগ নেই। এছাড়া যারা বর্তমানে এমপির কথা বলছে, তারা সবাই বিরোধীতার কারনেই এসব বলছে। এমপি সাহেবের জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য একটি পক্ষ দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেশকাতুল জান্নাত রাবেয়া বলেন, ঘর উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। মোবাইল ফোনের মাধ্যম জানতে পেরে তাৎক্ষনিকভাবে তশিলদার পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সরকারী জায়গায় অবৈধ ভাবে দোকান নির্মানের বিষয়টি নিয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম কুদরত-এ-খুদা বলেন, সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দোকান ঘর নির্মাণ বা দখল করতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ করে থাকেন অবশ্যই তা ভেঙ্গে দেওয়া হবে। প্রভাবশালী যে হোক না কেন, সরকারী জায়গা অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবেনা।