ফরিদপুরের ৯ উপজেলায় প্রার্থীদের দীর্ঘ লাইন

কামরুজ্জামান সোহেল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাঢোল শেষ না হতেই উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে সরব হয়েছেন বিভিন্ন দলের নেতারা। ফরিদপুরের ৯টি উপজেলায় সরকার দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে বেশ তৎপরতা চালাচ্ছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ৯টি উপজেলায় প্রায় শতাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। আওয়ামীলীগ দলীয় প্রতিক না দেবার ঘোষনায় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে আশংকাজনক হারে। অন্যদলের কয়েক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও বিএনপির কোন প্রার্থীর নাম এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। নির্বাচনে দলের সমর্থন পেতে কয়েক প্রার্থীর ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের ম্যানেজ করার বিষয়টি এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় হেভিওয়েট প্রার্থীদের পাশাপাশি এবার নতুন মুখের আধিক্য বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নানাভাবে তাদের প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে ফরিদপুরের ৯টি উপজেলাতেই আওয়ামীলীগের দুটি গ্রুপ পাল্টাপাল্টি ভাবে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের সমর্থন দেবেন এমন আভাস পাওয়া গেছে। ফরিদপুরের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন দলের দুই নেতা। আর দুটিতে দলের গুরুত্বপূর্ন পদে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জয়ী হন। ফলে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের জয়ী ও পরাজিত প্রার্থীরা তাদের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামবেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র হিসাবে জয়ী প্রার্থীরাও তাদের প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন। ফলে সংসদ নির্বাচনের মতো ফরিদপুরের ৯টি উপজেলাতে বেশ কঠিন লড়াই হবে।
উপজেলা নির্বাচনের ফরিদপুর সদর উপজেলায় ইতোমধ্যেই একাধিক প্রার্থী বিভিন্ন ভাবে তাদের প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামীলীগের তরফ থেকে নৌকা প্রতিক কিংবা কাউকে সমর্থন না দেবার ঘোষনায় দলীয় প্রার্থীরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত ফরিদপুর সদর উপজেলায় আওয়ামীলীগের প্রায় এক ডজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে তেমন একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে অন্য দলের কয়েক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে নির্বাচনে অংশ নিতে।
ফরিদপুর সদর উপজেলাটি ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- কোতয়ালী আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, গোলাম রব্বানী খান মুন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোঃ লিয়াকত হোসেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মাহাবুবুল হাসান ভুইয়া পিংকু, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম মোঃ নাছির, সরকারী রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক ভিপি ও শহর আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান , থানা আওয়ামীলীগের সদস্য ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন, ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মরহুম ইমরান চৌধুরীর ছেলে, যুবলীগ নেতা ইতমাম হাসিন চৌধুরী।
ভাঙ্গা উপজেলায় এবার রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু প্রার্থী। নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যারা তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি মোখলেছুর রহমান সুমন, জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান শাহিন শেখ (শাহিনুর), সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জালাল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মিয়া, ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মুনসুর আহমেদ মুন্সী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি শামসুল আলম রাসেল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মেহেদী হাসান লিটু, আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাপোলো নওরোজ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পরিমল চন্দ্র দাস, আওয়ামীলীগ নেতা হাজী সোবহান মুন্সী।
নগরকান্দার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় এবার নির্বাচন করতে একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থী এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এরমধ্যে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার, আওয়ামীলীগ নেতা কাজী বাবুল, তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা তালুকদার নাজমুল হাসান।
চরভদ্রাসন উপজেলায় আলোচনায় যারা রয়েছেন তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ কাউসার হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ার আলী মোল্লা, বর্তমান বাইস চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন মোল্লা, ইঞ্জিনিয়ার নিজামউদ্দিন আহমেদ, ফয়সাল হোসেন শাওন, শেখ খবিরউদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুল বারী দিপু খাঁ, রফিকুল ইসলাম বেপারী।
সদরপুর উপজেলায় প্রার্থী হতে যারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান, যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল, সায়েদীদ গামাল লিপু।
বোয়ালমারী উপজেলায় একাধিক প্রার্থী প্রচারনা চালাচ্ছেন। এরমধ্যে রয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিরধা পিকুল, যুবলীগ নেতা শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, মিজানুর রহমান মৃধা মিলন, হিরু মুন্সী।
আলফাডাঙ্গা উপজেলায় প্রচারনা চালাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান একে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ, সাবেক পৌরমেয়র সাইফুর রহমান সাইফার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খান বেলায়েত হোসেন, পাচুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান, বানা ইউপি যুবলীগের সভাপতি কাজী মনিরুল হক, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন, আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য তাহিদুর রহমান মুক্ত, আওয়ামীলীগ নেতা সাইদুর রহমান।
মধুখালী উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু, ওয়াকার্স পার্টির মধুখালী শাখার সম্পাদক আবু সাঈদ মিয়া, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মোরাদুজ্জামান মুরাদ।
সালথা উপজেলায় যারা প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্ব, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন, সৈয়দ মাহতাব আলী মিলটন।

%d