অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় পূর্ব খাবাসপুরের অলিগলি

কামরুজ্জামান সোহেল।
অল্প বৃষ্টি হলেই পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ এলাকাই যায় তলিয়ে। সড়কের পাশাপাশি বাড়ীর মধ্যে ঢুকে পড়ে পানি। ফলে ঘর থেকে বের হতেও পারেন না অনেকে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারনে দীর্ঘ দুই যুগের বেশী সময় ধরে ফরিদপুর পৌরবাসী পোহাচ্ছে এমন দূর্ভোগ। ভোটের আগে জনপ্রতিনিধিরা উন্নয়নের গালগল্প শোনালেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই। ফলে নিদারুন কষ্টের মধ্যদিয়েই এমন নিয়তি মেনে নিয়েই চলতে হচ্ছে বিভিন্ন মহল্লার নাগরিকদের। এমন চিত্র দেখা গেছে, ফরিদপুর পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লায়।
১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ফরিদপুর পৌরসভা। দীর্ঘ ১৫৫ বছর পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের তেমন একটা ছোঁয়া লাগেনি ১ম শ্রেনী হিসাবে পরিচিত এ পৌরসভার ওয়ার্ডগুলোতে। বর্তমানে ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে অধিকাংশ ওয়ার্ড গুলোতেই নানা সমস্যায় জর্জরিত। এরমধ্যে সবচে শোচনীয় অবস্থা ১৫ নং ওয়ার্ডের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লাটি। পৌরসভা সংলগ্ন এ ওয়ার্ডের হাজারো মানুষের যেন দূর্ভোগের শেষ নেই। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় অলিগলি-মহল্লা। ফলে নোংরা পানিতে সয়লাব হয়ে যায় গোটা এলাকা। রাস্তা তলিয়ে গিয়ে বাসা বাড়ীতেও ঢুকে পড়ে ময়লাযুক্ত পানি। রান্না-বান্নার কাজ করতে পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়। তাছাড়া ময়লাযুক্ত পানি মাড়িয়ে মুসল্লীদের মসজিদে যেতে হয়। টিউবয়েল গুলো তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দেয়। অসুস্থ্য রোগীকে নিয়েও চলাচলে পড়তে হয় নিদারুন কষ্টের মধ্যে। আর স্কুল শিক্ষার্থীসহ এলাকার হাজারো মানুষ পড়েন বিড়ম্বনায়। ফলে চরম দূর্ভোগের মধ্যে বসবাস করতে হয় মাসের পর মাস। এমন অবস্থা চলছে দীর্ঘ দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে। ওয়ার্ডবাসীর এমন দূর্ভোগ দিনের পর দিন চললেও দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ ওয়ার্ডের শান্তিবাগ, ইমামবাগ, তালতলা, ঢাকাইয়াপট্রি, হিতৈষী স্কুল সংলগ্ন এলাকাসহ বেশীর ভাগ এলাকায় অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। স্থান্যীয় বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, তাদের এলাকায় কেউ বাসা ভাড়া নিতে চাননা। জলাবদ্ধতার কারনে দিনের পর দিন ভুক্তভোগী তারা। আরেক বাসিন্দা খায়রুজ্জামান জানান, অল্প বৃষ্টি হলেই তাদের সড়কটি একেবারেই ডুবে যায়। ফলে চলাচলে মারাত্বক সমস্যার সৃষ্টি হয়। ময়লা নোংরা পানি মাড়িয়ে চলতে হচ্ছে। ঢাকাইয়াপট্রির বাসিন্দা মোঃ লিটন জানান, মূল রাস্তা থেকে অলিগলির রাস্তা নীচু হবার কারনে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় দীর্ঘসময় পানি আটকে থাকে। এসময় ঘরের মধ্যেও পানি ঢুকে যায়। এ মহল্রায় দুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা ওয়েছে। এসব স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বিঘœ ঘটছে। তাছাড়া কয়েকটি খেলার মাঠ থাকলেও মাসের পর মাস মাঠ গুলো জলাবদ্ধ থাকার কারনে সেখানে খেলাধূলাও করতে পারছেনা শিশুরা। বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর ও পৌর মেয়রকে বলা হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেননি তারা। জলাবদ্ধতার বিষয়টি নিয়ে এ ওয়ার্ডের মানুষের চরম ক্ষোভ থাকলেও সুরাহার বিষয়ে পৌরসভা একেবারেই নিরব ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয় কাউন্সিলর ইদ্রিস খানের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি শুধুমাত্র আশ^াসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখছেন বলে জানান ভূক্তভোগীরা।
দীর্ঘদিন ধরে ১৫নং ওয়ার্ডবাসীর জলাবদ্ধতার বিষয়ে ফরিদপুর পৌরসভার প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলাম জানান, পৌরসভার সক্ষমতা অনুযায়ী যে ব্যবস্থা নিলে জলাবদ্ধতা নিরসন হয় সে বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

%d