আওয়ামীলীগ প্রার্থী কাজী জাফরউল্যাহকে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি

কামরুজ্জামান সোহেল ।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফরউল্যাহকে শোকজ করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এ শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন চৌধুরীর সই করা চিঠি কাজী জাফরউল্যাহকে পাঠানো হয়েছে।
এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বুধবার একটি লিখিত অভিযোগ দেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে। এর সাথে কাজী জাফরউল্যাহ’র বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ দেওয়া হয়। নিক্সনের এ লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে কাজী জাফরউল্যহকে শোকজ করে বৃহস্পতিবার সশরীরে হাজির হয়ে কাজী জাফরউল্যাহকে শোকজের জবাব দিতে বলাহয়।
কাজী জাফরউল্যাহকে দেওয়া শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে ,আপনি কাজী জাফরউল্যাহ, পিতা-কাজী মাহবুবউল্যাহ, গ্রাম: কাউলীবেড়া, ডাকঘর: কাউলীবেড়া, উপজেলা: ভাংগা, জেলা: ফরিদপুর সংসদীয় আসন নং ২১৪ ফরিদপুর-৪ এ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোয়নপত্র দাখিল করেছেন যা গত ৪ ডিসেম্বর রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ফরিদপুর কর্তৃক বৈধ মর্মে বিবেচিত হয়েছে।
এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী মজিবুর রহমান চৌধুরী ১৩ ডিসেম্বর এই মর্মে লিখিত অভিযোগ দাখিলকরেছেন যে, আপনি ১৩ ডিসেম্বর ভাংগা উপজেলাধীন শেখপুরা বাজারে মাইক ব্যবহার করে গণসংযোগ ও পথসভা করে নির্বাচনী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। শেখপুরা বাজারে আগত সর্ব সাধারণ, ব্যবসায়ীবৃন্দ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় কালে একটি সভায় যোগদান করেছেন এবং উক্ত সভায় বক্তব্য প্রদান কালে আপনি নিম্নরূপ উক্তি করেছেন- “এমপিতো যে আছে সেতো আমাদের এলাকার না।সে হলো মাদারীপুর থেকে শিবচরের। সেই আসছে এখানে বালি কাটতে, সে আসছে টাকা বানাতে, আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তেন করতে কি সে আসছে ? সে বলে কাজী মাহাবুল্লাহ একটা চোর। সে বলে যে আমি ফকিরের গোষ্ঠির লোক। ফক্কিনির ছেলে। আপনারা বুঝতে পারছেন যে, আমারে যদি একথা কয় কাজী মাহাবুল্লাহরে যদি এই কথা কয় তাহলে আপনাদের কি অবস্থা করবে। তার যে কতটা হিংসা, বিদ্বেষ।”
আপনার উক্তরূপ বক্তব্য সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি১১ (ক) এর পরিপন্থী। একই সাথে, আপনি উক্ত সভা সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে লিখিত অনুমতি গ্রহণ ও স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে সভায় অংশগ্রহণ করে উক্ত বিধিমালার বিধি৬(খ) ও৬(গ) লঙ্ঘন করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।
আপনি উক্তরূপ কার্যক্রমের মাধ্যমে সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮এর বিধি১১(ক), ৬(খ) ও৬(গ) এর বিধান এবং তৎসহ বিধি ১২এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন যা নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত কেন বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরণ করা হবেনা তৎমর্মে আগামী ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার মধ্যে এ কমিটির অস্থায়ী কার্যালয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, ২য় আদালত, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ফরিদপুর এ ব্যক্তিগত ভাবে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী কাজী জাফরউল্যাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার মুঠো ফোনটি রিসিভ করেননি।

%d